নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যায়ে উন্নীত করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা নেওয়া জরুরি। তিনি উল্লেখ করেছেন, বন্দর নিয়ে অনেক আলোচনা হতে পারে, তবে উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি, অর্থ ও দক্ষতা অপরিহার্য। বন্দরের উন্নয়নে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বেশিরভাগ বন্দর বেসরকারি অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, “আমরাও এ পথে এগোতে চাই।”
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার লালদিয়া চর কনটেইনার ইয়ার্ড উদ্বোধনের সময় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন আরও জানান, দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে কাউকে বন্দর পরিচালনার সুযোগ দেয়া হবে না। চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা ৫৬ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ৬৬ হাজারে উন্নীত করা হবে। লালদিয়ার চর টার্মিনাল ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, বন্দরকে গতিশীল করতে যে প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজন, সেটিই অগ্রাধিকার পাবে। সব ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড সরকার অনুমোদন করবে না।
উপদেষ্টা আরও জানান, দেশের ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি চাহিদা সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি অপরিহার্য এবং বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।
লালদিয়ার চর টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। বন্দরের অব্যবহৃত স্থানগুলো কাজে লাগানো হবে। চট্টগ্রামে ট্রাক টার্মিনালের অভাবে নগরী ও জেলার যানজট বাড়ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩২ একর জমিতে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করছে। এর মধ্যে ১৪ একর কনটেইনার ইয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার হবে, যা ১০ হাজার কনটেইনার এবং ১,৫০০ ট্রাক রাখার সক্ষমতা দেবে। এছাড়াও, ৮ একর হেভি লিফট কার্গো জেটি ব্যাকআপ এবং ১০ একর এপিএম টার্মিনাল এলাকা হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ৩৭ বছর পর বন্দরের ট্যারিফ হালনাগাদ করা হচ্ছে। বর্তমান ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা ১,০০০ টাকা আয় করছেন, অথচ বন্দর পাচ্ছে ৫০০ টাকা। বন্দরের পরিচালনার খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ট্যারিফ সংস্কার অপরিহার্য। যদিও নতুন মাশুল এক মাসের জন্য স্থগিত এবং আদালতে মামলা হয়েছে, তবুও সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ট্যারিফ সমন্বয় জরুরি।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন পরে বে টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন টার্মিনাল, তালতলা কনটেইনার ইয়ার্ড এবং এক্সওয়াই শেড ও কাস্টমস অকশন শেড পরিদর্শন করেন। বিকেলে নতুন ট্যারিফ ও পোর্ট চার্জেস সংক্রান্ত সভা স্থগিত করা হয়। অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম মনিরুজ্জামানসহ বন্দর ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

