সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে কচুর মুখি চাষ বাড়ছে, পরিবেশ ঝুঁকির মুখে

শেয়ার করুন

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সমতলে চাষের উপযোগী কচুর মুখি চাষ। তবে এতে পাহাড়ের টপ সয়েল ক্ষয়ে ঝিরি-নালা ভরাট হচ্ছে এবং পাহাড়ে পানির সঞ্চয় কমছে। পরিবেশবাদীরা সতর্ক করেছেন, বিস্তীর্ণ এলাকা ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীর আবাস হারাচ্ছে এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

খাগড়াছড়ির বনকর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা বলেন, “কচু মূলত সমতল ভূমির ফসল। পাহাড়ে না করে সমতলে চাষ করা উচিত। পাহাড়ে ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছ লাগানো উচিত।”

কৃষকেরা রোগবালাই কম হওয়া ও স্বল্প সময়ে ভালো দাম পাওয়ায় পাহাড়ে কচুর মুখি চাষে আগ্রহী। মাটিরাঙা উপজেলায় সর্বোচ্চ চাষ হয়। গবেষণা অনুযায়ী, ২৬ শতাংশ খাড়া পাহাড়ের এক হেক্টর জমি চাষে বছরে ৫৮ টন মাটি ধুয়ে ঝিরিতে পড়ে। ৪০–৬০ শতাংশ খাড়া পাহাড়ে ক্ষয় আরও বেশি।

বান্দরবান মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “পাহাড়ে মাটি কুপিয়ে চাষ করলে টপ সয়েল হারিয়ে যায়। দুই–চার বছরের ক্ষতি দৃশ্যমান হলেও ১০–১৫ বছরের মধ্যে এসব জমি চাষযোগ্য হবে না।”

পরিবেশবাদীরা বলেন, পাহাড়ে কচুর চাষ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হলেও জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর। তারা টেরেস বা ধাপ পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন। চীন, নেপাল ও ভিয়েতনামে টেরেস পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয় এবং পানির সঞ্চয়ও ভালো থাকে।

খাগড়াছড়ির কৃষি বিভাগও সমতলে কচুর চাষ করার পরামর্শ দিয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমে কৃষকেরা এখন পাহাড়ে চাষের নেতিবাচক প্রভাব বুঝতে পারছেন। মাটিরাঙার তাইন্দংয়ের চাষি মো. কাশেম জানিয়েছেন, “ভবিষ্যতে পাহাড়ে কচুর মুখি চাষ করব না।”

সাম্প্রতিক খবর

এই বিভাগের আরও খবর