রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ায় আবার বাড়ছে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি। গত এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১০৭ কোটি ডলার। আর এক মাসের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ২৭৫ কোটি ডলার। একই সঙ্গে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাবেও নেতিবাচক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি হিসাব ও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ায় দেশের বৈদেশিক খাতে চাপ তৈরি হতে পারে। এতে দীর্ঘমেয়াদে টাকার মানে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও আরও কমে যেতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রথম প্রন্তিকে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অন্যদিকে আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি ডলার। সেই হিসেবে বাংলাদেশের মোট ৫৭১ কোটি ২০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
অপরদিকে, চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের আগস্ট শেষে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৯৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ২৭৫ কোটি ডলার।
এছাড়া, আগের অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১০৭ কোটি ডলার।
প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য যেখানে উদ্বৃত্ত ছিল’ সেখানে চলতি অর্থবছরে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঘাটতি বা ঋণাত্বক হয়ে গেছে।
সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি ছিল ১৪৮ কোটি ডলার; চলতি অর্থবছরে তা ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত আছে।
তথ্যমতে জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। যেটা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। আগের বছরের একই সময়ে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ দশকি ৫৪ বিলিয়ন ডলার।
দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) বেড়েছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তিন মাসে ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৩১ কোটি ৮০ ডলারে উঠেছে।
তবে আলোচিত দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) নেতিবাচক অবস্থায় আছে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) যা এসেছিল তার চেয়ে বেশি চলে গেছে। তার আগের অর্থবছরের শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ ছিল ৫০ লাখ ডলার; এখন তা (ঋণাত্মক) ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।
