সিরাজগঞ্জের বিস্তীর্ণ যমুনার চরাঞ্চল এখন মরিচের লাল আভায় রঙিন। কুয়াশা ভেদ করে যখন সকালের রোদ মাথা তোলে, তখন চরজুড়ে ঝুলে থাকা পাকামরিচের লালচে ঝিলিক এক অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করে। প্রাকৃতিক উর্বরতা, বালুকাময় জমি ও যমুনার মিঠে জলীয় পরিবেশ মরিচ চাষের জন্য এ অঞ্চলে এক অনবদ্য সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
শুকনো মৌসুমে চরাঞ্চলের মানুষ আগে যেভাবে শুধুমাত্র ভুট্টা কিংবা শাকসবজির দিকে ঝুঁকতো, এখন সেখানে মরিচই হয়ে উঠেছে প্রধান আয়ের উৎস। কৃষকরা জানাচ্ছেন, চরাঞ্চলের মাটিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার তুলনামূলক কম হওয়ায় মরিচের স্বাদ, ঝাঁজ এবং রঙ—সবকিছুই হয় আলাদা মানের। এতে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি রাজধানী ও বিভিন্ন জেলার আড়তগুলোয় সিরাজগঞ্জের মরিচের বিশেষ চাহিদা তৈরি হয়েছে।
চরবাসীর কাছে মরিচ চাষ শুধু ফসল নয়; এটি ভাগ্য বদলের হাতিয়ার। অনেকে বলছেন, সীমিত জমি, স্বল্প খরচ আর দ্রুত আয়ের কারণে মরিচ চাষই এখন তাদের বছরের সবচেয়ে লাভজনক উদ্যোগ। নারী-পুরুষ মিলিয়ে পুরো পরিবারই জড়িত হয় তুলতে, শুকাতে, বাছাই করতে—ফলে বাড়তি কর্মসংস্থান হয় গ্রামীণ মানুষের।
যমুনার চরাঞ্চলে মরিচ রাঙানো এই লাল দৃশ্য শুধু কৃষি সাফল্যের গল্প নয়, এটি সিরাজগঞ্জের মানুষের পরিশ্রম, আশা ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের প্রতীক।


