বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ‘৭১ হয় নাই, আমরা কিছুই করি নাই, যা হয়েছে সব চব্বিশে হয়েছে’—এভাবেই বোঝানোর চেষ্টা চলছে।”
সোমবার সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “একাত্তরে হাজার হাজার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। একাত্তরে মা-বোনদের ওপর অধিক নির্যাতন ও হত্যাও করা হয়েছে। এসব আমরা ভোলা সম্ভব না। আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করেছি, পরিবারের খবর নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেই ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা হচ্ছে — তা মেনে নেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “এখানে যে জন্ম নিয়েছি সেটাকে মনে রাখতে হবে। আজ সুপরিকল্পিতভাবে কিছু মহল রয়েছে—যারা স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের সঙ্গে যোগসাজোস করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, নারী-শিশুদের খাঁন বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে—তাদের সঙ্গে কোনো আপোষ করা যায় না।”
ফখরুল বলেন, “এরা আজ দেশটাকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে। কিছু মহল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে বিক্রি করে এই অপকর্মগুলো করতে চাইছে। আমরা সেটি হতে দেব না। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে আনতে হবে। আমরা ৭১ সালে লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছি।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আজ একটি ষড়যন্ত্র চলছে—নির্বাচনকে ব্যাহত ও পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত। নির্বাচনের বিলম্ব মানে দেশের বিপর্যয়। আমরা চাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্রুত নির্বাচন ব্যবস্থা করে নির্বাচনী সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।”
ফখরুল সংগঠিতভাবে বলেন, “আমরা হিন্দু-মুসলিম—সব ধর্মের মানুষ ভাইফোঁট; এখানে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেব না।”
সভায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট আহ্বায়ক নুর করিমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাঈম জাহাঙ্গীর, সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহমদ খান, সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলী সরকার, এবং জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন প্রমুখ।

