বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৫

প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েই চেন্নাই সফর

Share

গত বছরের ডিসেম্বরে নিশ্চিত হয় যে বাংলাদেশ যুব হকি দল যুব বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে। দেশের হকির ইতিহাসে প্রথমবার এই পর্যায়ে খেলতে যাওয়ায় বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। সেই সময় বলা হয়েছিল, ভারতে অনুষ্ঠেয় যুব হকি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য ছয় মাসের ক্যাম্প করা হবে এবং পাশাপাশি বিদেশে ইউরোপের কোনো দেশের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনাও ছিল।

কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ছয় মাসের ক্যাম্প কমে চার মাসে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ভিসা জটিলতার কারণে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিত যুব হকির বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি তেমন ভালো হয়নি।

তারপরও বিশ্বমঞ্চে লড়াই করার প্রত্যয় খেলোয়াড়দের রয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফ্যালকন হলে জাতীয় যুব হকি দলের জার্সি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন অনুষ্ঠানে অধিনায়ক মেহেরান হাসান সামিন স্বপ্নের কথা বলেন। হকি ফেডারেশনের সভাপতি এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এই দল ভালো করবে বলে বিশ্বাস প্রকাশ করেন।

২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে যুব বিশ্বকাপ। গ্রুপ ‘এফ’-এ বাংলাদেশ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ফ্রান্সের বিপক্ষে। ২৯ নভেম্বর প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে তারা। কাগজে-কলমে এবং শক্তির বিচারে তিনটি দলই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে। প্রস্তুতির পরিকল্পনা অনুযায়ী লড়াই করতে না পারায় লাল-সবুজের দল কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও প্রত্যয় রয়েছে।

রোববার সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) রিয়াজুল হাসান স্বীকার করেন, “যখন বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছে, তখনই ক্যাম্প চালু করলে ভালো হতো। কিন্তু তখন প্রধান সমস্যা ছিল আর্থিক। আগস্ট থেকে ক্যাম্প শুরু করেছি। আগে বেশ কয়েকটি মাস চলে গেছে। যদি আর্থিক সমস্যা না হত, আমরা ক্যাম্পটা আরও আগেই শুরু করতাম। স্পন্সর এবং সরকারের কিছু অর্থ আসার সঙ্গে মিলিয়ে আমরা আগস্ট থেকে ডিসেম্বর ১১ পর্যন্ত ক্যাম্প চালাচ্ছি। খরচ আনুমানিক ৫ কোটি টাকা।”

হকির ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে সরকারের কাছে যথাযথ গুরুত্ব দিতে পারিনি কি—এই প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সরকারকে প্রথম দিন থেকেই জানিয়েছি বাংলাদেশ হকি বিশ্বকাপে খেলবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট কি তা বোঝাতে আমাদের বাকি কিছু করা উচিত ছিল না। বিভিন্ন সরকারি মিটিংয়ে জানিয়েছি এটি বিশ্বকাপ। অর্থ হয়তো এই মাসের মধ্যে পাব। আমাদের লক্ষ্য ছিল পাঁচ মাস ক্যাম্প, কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এক মাস কম হয়েছে।”

বিদেশে গিয়ে প্রস্তুতি নিতে না পারার আফসোস থাকলেও বিশ্বকাপে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অধিনায়ক মেহেরান হাসান সামিন। তিনি বলেন, “সুইজারল্যান্ডে গেলে খুবই ভালো হতো। ইউরোপীয় দলের সঙ্গে খেললে নিজেদের অবস্থান বোঝা যেত এবং তাদের খেলার ধরন অনুধাবন করতে পারতাম। যাইহোক, আমাদের গ্রুপের অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও দক্ষিণ কোরিয়ার দলও কোয়ালিফাই করেছে। তারা শক্তিশালী হলেও তাদের সঙ্গে লড়াই করার সক্ষমতা আমাদের আছে।”

Read more

Local News