বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৫

অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় যে রোগ, চিনে রাখুন লক্ষণ ও করণীয়

Share

চোখে পানি পড়া, ফোলা লাল ভাব কিংবা চুলকানি—এসব উপসর্গ দেখলেই অনেকেই ধরে নেন, ‘চোখ উঠেছে’। দোকান থেকে চোখের ড্রপ কিনে ব্যবহার করেই ক্ষান্ত হন। কিন্তু এই সাধারণ লক্ষণগুলোই হতে পারে ভয়াবহ রোগ ট্র্যাকোমা-র প্রাথমিক সংকেত, যা অবহেলায় অন্ধত্ব পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ল্যামিডিয়া ট্র্যাকোমাটিস নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেই ট্র্যাকোমা হয়। এতে চোখের পাতার ভেতরের স্তর (কনজাংটিভা) আক্রান্ত হয়। শুরুতে এটি হালকা প্রদাহ মনে হলেও চিকিৎসা না করালে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি থাকে।


🦠 কীভাবে ছড়ায় এই সংক্রমণ

সংক্রমিত ব্যক্তির চোখ বা নাক থেকে নিঃসৃত তরলের মাধ্যমে ট্র্যাকোমা সহজেই ছড়াতে পারে। অপরিষ্কার হাত, তোয়ালে বা কাপড় ব্যবহারের মাধ্যমেও এটি ছড়ায়।
স্যানিটেশনের অভাব, পরিষ্কার পানির সংকট ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।


⚠️ প্রাথমিক লক্ষণ

  • চোখ লাল হওয়া ও চুলকানি
  • চোখ থেকে পানি বা পিচুটি বের হওয়া
  • চোখের পাতা ফুলে যাওয়া
  • আলোতে তাকালে অস্বস্তি হওয়া

👁️ অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি

ট্র্যাকোমায় আক্রান্ত হলে বারবার সংক্রমণ ঘটতে পারে। এতে চোখের পাতার ভেতরের অংশে দাগ তৈরি হয় এবং এক পর্যায়ে চোখের পাতা ভেতরের দিকে উল্টে যায়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলে ট্রিকিয়াসিস
এর ফলে কর্নিয়ায় ঘর্ষণ লেগে তা ঘোলাটে হয়ে যায়—শেষপর্যন্ত আংশিক বা সম্পূর্ণ অন্ধত্ব দেখা দেয়। শিশু ও বয়স্করা এই রোগে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।


🩺 প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ট্র্যাকোমা প্রতিরোধে ‘SAFE’ পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে—

  • S: সার্জারি
  • A: অ্যান্টিবায়োটিক
  • F: মুখ ও চোখের পরিচ্ছন্নতা (Face cleanliness)
  • E: পরিবেশের উন্নয়ন (Environmental improvement)

সময়মতো চিকিৎসা ও সচেতনতা এই রোগ থেকে অন্ধত্বের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারে। নিয়মিত চোখ পরিষ্কার রাখা, ব্যক্তিগত তোয়ালে ব্যবহার করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই ট্র্যাকোমা প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

Read more

Local News